-
কৃতি ব্যক্তিবর্গ, তালিমনগর, লেখক পরিচিতি, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, শ্যামসুন্দরপুর, সমাজসেবক, সাগরকান্দি, সাগরকান্দি ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, সাহিত্য
মুহম্মদ খোয়াজউদ্দিন (১ম পর্ব)
মুহম্মদ খোয়াজউদ্দিন (১ম পর্ব) খ ম আবদুল আউয়াল ঊনিশ শতকের শেষে কেউ কেউ নিজেকে গড়ে তুলে সমাজকে এগিয়ে নেয়ার অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছিলেন। মুহাম্মদ খোয়াজউদ্দিন তাঁদেরই একজন। বিশ শতকের শুরুতে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় ও উগ্র জাতীয়তাবাদের বিকাশে ইউরোপে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে। এই যুদ্ধ প্রথম মহাযুদ্ধ বা বিশ্বযুদ্ধ নামে ইতিহাসে খ্যাত । প্রথম মহাযুদ্ধের সময়ে মুহম্মদ খোয়জউদ্দিন (১৯১১-১৯৮৫ খ্রি.) ছিলেন শিশু। আকাশে তখন দু’একটি নব আবিষ্কৃত যুদ্ধের উড়োজাহাজ দেখা দিলে মানুষ বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবতো মানুষ উড়তে শিখেছে। এটি তাঁর শৈশবের যুদ্ধ স্মৃতি। তিনি তখন স্থানীয় মক্তবে পড়াশুনা করেন। এ মক্তবটি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়, তাই এর নামকরণ করা…
-
মোহাম্মদ আবিদ আলী (২য় পর্ব)
মোহাম্মদ আবিদ আলী (২য় পর্ব) মোহাম্মদ আবিদ আলীর ‘হাদীসের গল্পগুচ্ছ’ গ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছিলেন সুজানগর উপজেলার আরেক কৃতি সন্তান লোকসাহিত্য বিশারদ মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে লিখিত ভূমিকাটি- “ইসলাম ধর্ম সভ্য সমাজে সুপরিচিত। ইসলাম ধর্মের পয়গম্বর হজরত মুহম্মদ (সা.)। আরব দেশে সর্বপ্রথম এই শ্রেষ্ঠ পয়গম্বরের বাণী প্রচারিত হয়েছিল। আরবেরা তখন অসভ্য এবং সভ্য জগত হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে নানা পাপাচারে লিপ্ত হয়ে জীবন যাপন করত। সেদেশে এবং সে জাতির মধ্যে হজরত মুহম্মদের অভ্যুদয় একটি পরম বিস্ময়ের ব্যাপার। আরও অধিক বিশ্বয়ের কথা এই যে তাঁর একক এবং আপ্রাণ চেষ্টার ফলে ইসলামের তৌহিদ-বাণী সমগ্র আরব দেশে পরিগৃহীত হয়েছিল; বর্বর আরবজাতি নব উন্মাদনায় দুর্বার…
-
মোহাম্মদ আবিদ আলী (১ম পর্ব)
মোহাম্মদ আবিদ আলী (১ম পর্ব) মোহাম্মদ আবিদ আলী (১৯০৪-১৯৮৭ খ্রি.) ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ ও লেখক। জন্ম: মোহাম্মদ আবিদ আলী ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত ভায়না ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবন: পিতা মুন্সি মিয়াজান মল্লিক ও মাতা বুলুজান নেছা। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মোহাম্মদ আবিদ আলী ছিলেন সবার বড়। মোহাম্মদ আবিদ আলী, এম. আকবর আলী ও মোহাম্মদ আবদুল জব্বার এই তিন সহোদর যেন একই বৃত্তে তিনটি ফুল। তাঁদের জন্মদায়িনী মা ‘রত্নগর্ভা’ জননীর সম্মানে ভূষিত। পিতা মিয়াজান মল্লিক প্রথম জীবনে মাঝি ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি স্বাধীনভাবে ছোট ছোট ব্যবসা শুরু করেন এবং এই ব্যবসার সীমিত আয়…
-
ড. অশোক কুমার বাগচী
ড. অশোক কুমার বাগচী উপমহাদেশের চিকিৎসাশাস্ত্রের এক অত্যন্ত পরিচিত ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নিউরো সার্জন। তিনিই সর্বপ্রথম জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অসুস্থ জীবন সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দাখিল করেন। জন্ম: ড. অশোক কুমার বাগচীর পৈত্রিক নিবাস পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত তাঁতিবন্দ গ্রামে। তিনি ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর রংপুরে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবন: ড. বাগচীর পিতার নাম দ্বিজদাস বাগচি। তাঁর জন্মের সময় পিতা দ্বিজদাস বাগচী পাবনা শহরের ‘বাগচি ফার্মেসি’তে ডাক্তারি করতেন। পিতা ও পিতামহ উভয়েই সেকালের নাম করা ডাক্তার ছিলেন। শিক্ষা জীবন: ড. বাগচী ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে পাবনা জি.সি আইতে ভর্তি হন। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিকুলেশন পাস…
-
কৃতি ব্যক্তিবর্গ, গবেষক, গোপালপুর (ভায়না), ভায়না, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লেখক পরিচিতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, সাহিত্য
এম. আকবর আলী
বাঙালি রেনেসাঁর অগ্রদূত এম. আকবর আলী। পাবনার কৃতী সন্তানদের মধ্যে এম. আকবর আলী প্রথম সারির একজন। শিক্ষাবিদ, গবেষক, লেখক, চিন্তাবিদ, ইতিহাসানুরাগী, ঐতিহ্য সন্ধানী, দানশীল প্রভৃতি অভিধায় তাঁকে ভূষিত করা যায়। সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সাতবাড়িয়া কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। জন্ম: এম. আকবর আলী ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ১ মার্চ, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে জন্ম জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবন: পিতা মুন্সি মিয়াজান মল্লিক ও মাতা বুলুজান নেছা। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে এম. আকবর আলী ছিলেন দ্বিতীয়। মোহাম্মদ আবিদ আলী, এম. আকবর আলী ও মোহাম্মদ আবদুল জব্বার এই তিন সহোদর যেন একই বৃত্তে তিনটি ফুল।…
-
মাওলানা রইচ উদ্দিন
মাওলানা রইচ উদ্দিন (১৮৯৬-১৯৬৫ খ্রি.) পাবনা জেলার একজন রাজনীতিবিদ, অনলবর্ষী বক্তা ও লেখক। সুজানগর উপজেলায় মাওলানা রইচ উদ্দিনই প্রথম এমএ পাস করেন। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে তিনি ছিলেন সমধিক পরিচিত। বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত ভাষায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন এবং সকল ভাষায় অনর্গল বক্তৃতা দিতে পারতেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মিশুক ও সদালাপী। সাধারণ পোশাক পরিধান করতেন তিনি। জন্ম: তিনি ১৮৯৬ সালে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি ইউনিয়নের অন্তর্গত পুকুরনিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাওলানা রইচ উদ্দিনের পিতার নাম রমজান আলী। শিক্ষা জীবন: মাওলানা রইচ উদ্দিন স্থানীয় শ্যামগঞ্জ মানিক কুণ্ডু বিদ্যাপীঠে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। সাগরকান্দি জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত জুনিয়র স্কুলে…
-
সরদার জয়েনউদ্দীন (১ম পর্ব)
সরদার জয়েনউদ্দীন (১ম পর্ব ) বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে, ভাষা ও সংস্কৃতির ক্রান্তিকালে বাংলা সাহিত্যে সরদার জয়েনউদ্দীনের দীপ্র আবির্ভাব। কথাসাহিত্যের ভূবনে একটি উজ্জ্বল নাম সরদার জয়েনউদ্দীন। সাংবাদিকতা এবং সাহিত্যের জগতে সরদার জয়েনউদ্দীন সর্বদা ছিলেন প্রগতির পক্ষে, মানবতার পক্ষে। একসময়, পঞ্চাশ-ষাটের দশকে, ঢাকার সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চায় অবশ্য উচ্চার্য নাম ছিল সরদার জয়েন উদ্দীন, কিন্তু পরিবর্তমান রুচি ও সমাজ স্রোতে এখন তিনি প্রায়-বিস্মৃত এক নাম। তবে যারা সৎ পাঠক, তাদের চেতনায় জয়েনউদ্দীন সর্বদা জেগে থাকবেন। কেননা তার সাহিত্যে আছে গণমানুষের মুক্তি-আকুতির কথা। তিনি ছিলেন একাধারে একজন ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও সম্পাদক। তিনিই বাংলাদেশে বইমেলার প্রবর্তক। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলা একাডেমি…